একটি দেশ যেভাবে দাঁড়ায়
লেখক রউফুল আলম
(যুক্তরাষ্ট্রে ফার্মাসউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির সায়েন্টিস্ট)
১ম অধ্যায়ে লেখক বলছেন, আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি তরুণ গবেষক পাঠায় যে দেশটি, সেটা হল চীন। প্রায় ১০ হাজার, প্রতিবছর। লেখক এটাকে বলছেন ইন্টিলেকচুয়াল স্ক্যানিং। চীন হাজার হাজার ছেলেমেয়ে এখানে পাঠিয়ে গবেষণার যত ডিজাইন,অ্যারেঞ্জমেন্ট, টুলস-টেকনিক আছে সেগুলো স্ক্যান করে নিয়ে যাচ্ছে। লেখক বলছেন চীন থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। যে দেশটি সারা দুনিয়া থেকে শেখে, তাদের কাছ থেকে আমরা প্রচুর জ্ঞান বিজ্ঞান নিতে পারি।
সজাগ হওহে তারুণ্য অংশে লেখক বলছেন, আমাদের দেশের অসংখ্য ছেলেমেয়ে ২০-২২ বছর বয়সে গবেষণার কথাই জানেননা।— সারা দুনিয়ায় তরুণেরা গড়ে ২৬-২৭ এর মধ্যে পিএইচডি শেষ করেন। সম্ভাবনাকে জাগতে দিন, অংশে তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশে বলছেন, আপনার যে ছেলেমেয়েটিকে ¯্রফে একজন ডাক্তার বানাবেন, সে হয়তো তার চেয়ে অনেক বড় কিছু হওয়ার যোগ্যতা রাখে। সে সম্ভাবনাকে বের করে আনার চেষ্টাও করতে হয়।
মগজের ধ্বসংযজ্ঞ অংশে লেখক উল্লেখ করেছেন, লেখকের সায়েন্টিফিক হিরোর নাম রিচার্ড ফাইনম্যান। বিল গেটসের প্রিয় শিক্ষক। মানুষ মজা করে বলে ফাইনম্যান একটি ডায়াগ্রাম একেই নোবেল পুরস্কার পেয়ে গেছেন। —এত সরল ডায়াগ্রাম বিজ্ঞানে খুব বেশি নেই। ফাইনম্যান বলতেন, I don’t create, what I don’t understand যা বুঝিনা তা গড়ি না।
অন্তরে বাহিরে দাসত্বের রজ্জু অংশে বলছেন, নিজেকে ক্ষুদ্র মনে করাই ক্ষুদ্রতা। আফ্রিকান একটি প্রবাদ আছে If you think your are too small to make a difference, try sleeping with a mosquito.
লেখকের দেশপ্রেম তথা দেশের প্রতি আবেগকে সম্মান জানাতে হয়। তিনি বলছেন পৃথিবীর পথে পথে যেখানেই গিয়েছি, মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করেছে হয়ার আর ইউ ফ্রম? হৃদয়ের সমস্ত ভালো লাগা দিয়ে ঝজু শিরে বলেছি, আই অ্যাম ফ্রম বাংলাদেশ।
নিজেকে আবিস্কার করো অংশে বলছেন,আমাদের দেশটার জন্য অনেক গবেষক, উদ্ভাবক প্রয়োজন। আমাদের বিজ্ঞানের ছেলেমেয়েরা যদি শুধু বিসিএস পরীক্ষাকেই আরাধনার বিষয় মনে করে তাহলে কী করে আমরা বিজ্ঞানী ও গবেষক পাব?– ঝাঁকের সঙ্গে দৌড়ে নিজের বৃহত্তর সম্ভাবনাটুকু খুন করো না।
জাগরণের কাল অংশে লেখক সম্ভাবনার কথা বলছেন, ট্রেক্সাসে প্রায় ৫০ এর অধিক বাংলাদেশি গবেষক রয়েছেন। — যে আমেরিকায় ট্রাম্প আসার কারণে ভিসা পাওয়াটাই কঠিন হয়ে গেছে, সে আমেরিকায়ও বাংলাদেশের বহু ছেলেমেয়ে যাচ্ছেন। লেখক বলছেন, ইন্টারনেট একটা বড় রিসোর্স। এটাকে কাজে লাগাতে হবে। চীনা ভাষা শেখো, জাপানি, কোরিয়ান, জার্মান, ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান, স্পানিশ শেখো। সুযোগগুলো লুফে নাও।
স্ট্যানফোর্ডের আকাশ অংশে বলছেন, ব্যবসা ও টেকনোলজির এক জীবন্ত জায়গা হলো ক্যালিফোর্নিয়া। ওখানে দেখা যায় একুশের তরুণেরা কোম্পানি খুলে বসে আছেন। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা হচ্ছে। নতুন নতুন আইডিয়া, উদ্ভাবন, প্রচার, প্রসার, বাণিজ্য -এই চলছে সেখানে।
ফড়িংয়ের চোখ তৈরি করো অংশে লেখক বলছেন, এক গবেষক লজ্জাবতী নিয়ে গবেষণা করছেন। গবেষকরা চেষ্ট করছেন, কী করে লজ্জাবতীর চুপসে যাওয়া নিয়ন্ত্রণকারী জিনকে স্টাডি করে অন্য উদ্ভিদের শরীরে প্রবেশ করানো যায়। তিনি বলছেন, আমগাছের যদি লজ্জাবতীর মতো গুণ থাকত, তাহলে ঝড়ের দিনে বৃষ্টি বা বাতাসের স্পর্শে নিজেকে গুটিয়ে নিতে পারত। ঝড়ের ধকল তাকে সইতে হতো না। এইরূপ চিন্তা আসলে -জিনের ইঞ্জিনিয়ারিং।
রউফুল আলমের চিন্তাগুলো আমাদের সন্তানদের নিকট ট্রান্সফার করতে পারি। ২০১৯ এর অমর একুশে বইমেলায় বইটি প্রকাশ হয়। ১৯২ পৃষ্ঠায় লিখিত এর মূল্য মাত্র ৩০০ টাকা। সময় প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। বইটি পেতে রকমারি ডট কমে অর্ডার করতে পারেন।