Posts in Corporate

তিনি লিডার হতে চান

মিস্টার আসিফ একটি ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট চেয়ারম্যান। স্বাভাবিকভাবেই ভর্তি পরীক্ষা কমিটি, জাতীয় দিবস পালনসহ ইউনিভার্সিটির বাস্তবায়ন কমিটিতে তার স্থান পাওয়ার কথা। কিন্তু কেন যেন তিনি এইজাতীয় কমিটিতে ডাক পাননা। যেটি বিব্রতকর সেটি হল তার ডিপার্টমেন্ট থেকে একজন জুনিয়ার লেকচারার দায়িত্বগুলো পান এবং তিনিও আন্তরিকতার সাথে তা পালন করেন। চুপচাপ শান্ত স্বভাবের মিস্টার আসিফ এব্যাপারে খুব মনোকষ্টে থাকেন।

এক চায়ের আড্ডায় বাল্যকালের বন্ধুকে বলেন বিষয়টি। বন্ধু আবার মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির জিএম পদে আছেন। সমস্যার কথা শুনে হাসতে লাগলেন বন্ধুটি। তোর বুঝি নেতাগিরি করতে মন চায়! ঠাট্টা করে বলতে লাগলেন, তা শুধু মনে চাইলে হবে! সেটি তো খোলামেলা কর্তৃপক্ষকে বলতে হবে। শোন দোস্ত! নিজের নেতৃত্বগুণ মাটি চাপা দিয়ে রাখলে নেতৃত্ব দেয়া যায়না। নেতৃত্ব দিতে চাই, দায়িত্ব পেতে চাই এটি কর্তৃপক্ষকে বলতে হয় এবং দায়িত্ব পেলে সেটিও নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন করতে হবে। তবেই না দায়িত্ব আসবে। একবার দায়িত্ব সুচারুভাবে সম্পাদন হলে তোর ঘাড়ে বহু দায়িত্ব এমনি এমনি চলে আসবে। তখন কিন্তু দম ফেলার ফুরসত পাবিনা। আবার কারও কারও চলা ফেরায় এমনিতেই নেতৃত্বগুণ প্রকাশ পায়। এটি একরকম ন্যাচারাল লিডারশিপ। by born লিডার যাকে বলে। তো তুমি অনেক বড় কিছু হতে চাও, মানুষ বা প্রতিষ্ঠানের জন্য অবদান রাখতে চাও সেটির জন্য তোমাকে ফিল্ডে থেকে স্বেচ্ছায় দায়িত্ব পালন করতে হবে। এই ধর, কারও রক্ত লাগবে। তুমি নানান জায়গায় ফোন দিয়ে সেটির সমাধান করে দিবে। আবার কোন একটি প্রোগ্রাম আয়োজন হবে -তুমি আগ্রহ নিয়ে কোন একটি কাজ করে দিবে। অফিসিয়ালি লিডার হতে সময় লাগতে পারে, সামাজিক বহু কাজ করেও তুমি মানুষের জন্য লিডার হতে পার। শুধু উদ্যোগটা দরকার। একটু সময় আর শ্রম দেয়া দরকার।

অ্যাভারেজ -এর দিন শেষ

কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সকলে কি শতভাগ ঢেলে কাজ করেন? অনেকেই করেন। আবার কেউ কেউ করিনা। এই না করার কারনে পাশের কলিগদের উপর চাপ পড়ে। টোটাল প্রোডাক্টিভিটিতে প্রভাব পড়ে।
The New York Times এর কলামিস্ট Thomas Friedman এর বিখ্যাত একটা উক্তি শুনুন-অতীতে কর্মীদের অ্যাভারেজ স্কিল ছিল। তারা অ্যাভারেজ চাকরি করতো। উপভোগ করতো অ্যাভারেজ লাইফস্টাইল। কিন্তু অ্যাভারেজ এর দিন শেষ। সস্তায় রোবট, সস্তায় সফটওয়্যার, সস্তায় অটোমেশন, সস্তায় স্কিলড জনশক্তির যোগান চাকরির বাজারকে জটিল করে তুলছে। কোন ফিল্ডে আপনি আছেন সেটি বিষয় নয়। আপনি সে ফিল্ডে নিজেকে যোগ্য করে তুলতে পারছেন কিনা? আমাদের চেষ্টা করে যাওয়া উচিত কিভাবে যার যার জায়গায় অসাধারণ অবদান রাখা যায়। ভ্যালু এড করা যায়। নিজেকে আলাদাভাবে প্রকাশ করা যায়। আসুন অ্যাভারেজ কাজ-কর্মের সাথে বাড়তি কিছু যোগ করি। কোম্পানিকে এগিয়ে নিয়ে যাই।

WOW story

আপনি পাহাড়ের চূড়ায় উঠে অপলক নয়নে উদীয়মান সূর্যের দিকে অথবা শান্ত সমুদ্রের ডুবু ডুবু সূর্যের দিকে তাকিয়ে আছেন। তখনই মুগ্ধতার বহিঃপ্রকাশ ওয়াও (wow)।
ওয়াও স্টোরি কর্পোরেট কালচার উন্নয়নে চমৎকার ভূমিকা রাখতে পারে। তো কিভাবে? বিশ্বখ্যাত The Ritz-Carlton Hotel হোটেলের শতাধিক শাখা রয়েছে। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের প্রতিটি শিফটে ১৫ মিনিটের ওয়াও স্টোরি শেয়ার করা হয় ইমপ্লয়িদের মাঝে। এই স্টোরি তৈরি হয় ইমপ্লয়িদের ইউনিক ও স্মরণীয় অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। সাংহাই-এর হাউসকিপার সান্ধকালীন শিফটে যে গল্প শুনাচেছ, ১ ঘন্টা পরে হংকং-এ এবং পরদিন সকালে নিউইয়র্কের ইমপ্লয়িরা তা শুনছে।
আমরাও পারি আমাদের সেরা কাজগুলোর অভিজ্ঞতা অন্য কলিগদের সাথে শেয়ার করতে। একেকজন একেকভাবে ক্রাইসিস ম্যানেজ করেন। সেখান থেকে শেখার আছে। সিনিয়র জুনিয়র সবার কাছ থেকে শেখার আছে।

সমালোচনা চুপিচুপি সরাসরি

সিলিকন ভ্যালির কোম্পানি ‘Splunk’ এর প্রাক্তন সিইও Godfrey Sullivan । তাকে সিলিকন ভ্যালির অন্যতম আইকন সিইও বলা হয়ে থাকে। সুল্লিভান তার কোম্পানির বেশ প্রবৃদ্ধি এনে দেন। প্রবৃদ্ধির অনেকগুলো কারনের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ইমপ্লয়িদের প্রোডাক্টিটিভিটি পুরোপুরি বের করে আনার জন্য তিনি পাবলিকলি বা সবার সামনে তাদের ভুল ধরতেননা বরং ভালো ইফোর্টগুলোর জন্য বাহবা দিতেন। যখন তিনি মনে করতেন ইমপ্লয়ির ভুলের গঠনমূলক সমালোচনা করা উচিত, তখন তিনি তাকে ডেকে নিয়ে ওয়ান টু ওয়ান মিটিং করতেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি আলোচনা করতেন ও ভুল শুধরিয়ে দিতেন। এইধরনের কর্পোরেট কালচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ খ্যাতি অর্জন করেন।
কর্পোরেট অফিসে কেউ কেউ কলিগদেরকে যথেষ্ট পজেটিভ ফিডব্যাক দেননা। এমনকি ক্রিটিসাইজ করার ক্ষেত্রে ভুল অ্যাপ্রোচ ব্যবহার করেন। ভুল করলে অবশ্যই ভুল ধরতে হবে, তবে সেটি উপরোক্ত কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে করা যেতে পারে।

সেলিব্রেটিদের মতো

একজন সাকসেসফুল মানুষ। একইসাথে সেলিব্রেটি। মঞ্চের দিকে এগুচ্ছেন। যেতে যেতে সবার সাথে মুচকি হাসলেন। হাত নাড়লেন। কেমন আছেন টাইপ প্রশ্ন করলেন। কারও কারও নাম জিজ্ঞেস করলেন। মঞ্চে উঠে বক্তৃতা শুরু করলেন। এক ফাকে একটু আগে শুনে মনে রাখা দুই-এক জন মানুষের নামও উচ্চারণ করলেন। মনে হল কত যে আপন তিনি।

হ্যাঁ, আমরা সে লোকগুলোকে পছন্দ করি, যারা তার নামটি সঠিকভাবে মনে রাখে ও সুন্দর করে সম্বোধন করে। সুতরাং বিজনেসের সাথে সম্পৃক্ত মানুষগুলোকে আজীবনের বন্ধু হিসেবে ভাবুন। আলাপে বা গল্পের শুরুতে তাদের সাথে বিজনেস টপিক নয়। ব্যক্তিগত প্রশ্ন দিয়ে শুরু করতে পারি। কিভাবে তার ছুটির দিন ব্যয় হয়, তার বাচ্চারা কোন স্কুলে পড়ে, বাবা-মা কেমন আছেন অথবা তার ফেবারিট খেলাধুলার কথা জিজ্ঞেস করি। মানুষগুলোর সাথে বন্ধুর মত আচরণ করি, আন্তরিকভাবে কথা বলি যেভাবে সেলিব্রেটিরা করে থাকেন ।

কতজন মানুষ আমাকে আপনাকে চিনে

সেদিনের মত অফিস শেষ। মাগরিব নামাজ শেষে বের হবার প্রস্তুতি। অধিকাংশ কলিগ বের হয়ে গেছেন। সিনিয়র ভাই, পিয়নসহ আমরা ৩ জন সবার শেষে বের হলাম। সিনিয়র ভাই পিয়নকে অফার করলেন, চলো তোমাকে আজ ডিম খাওয়াব। না স্যার, ধন্যবাদ। রিপ্লাই দিল পিয়ন। আরে না খাইয়া ধন্যবাদ নয়। খাইয়া ধন্যবাদ দাও। চলো। বললেন বড় ভাই। তিনজনে বিট লবন মাখিয়ে গরম গরম ফুল বয়েলড ডিম খেলাম। সাথে টুকটাক গল্প-কৌতুকও চলল। পিয়ন ভাইয়ের চোখে আমি অন্যরকম তৃপ্তি দেখলাম। এটি আহামরি কোন নাশতা নয়। বাট মনে হয় তাকে কেউ এভাবে আদরমেখে ডেকে অফার করেনি অনেকদিন।
প্রবাদ আছে, ‘আপনি কতজন মানুষকে চেনেন সেটি বড় কোন বিষয় নয়। কতজন মানুষ আপনাকে চেনে সেটি বড় ব্যাপার।’ কথাটাকে যদি বৃহৎআঙ্গিকে বলি, কতজন মানুষ আপনাকে ভালো জানে এবং মনে রাখে সেটি অবশ্যই বড় বিষয়। যদি আপনি আপনার কোম্পানিতে একটি অবস্থান তৈরি করতে চান তাহলে আপনাকে coworker দের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে সর্বাতœক চেষ্টা করতে হবে। যাকে বলা যায় extraordinary relationship. শুধুমাত্র নিজের ডিপার্টমেন্ট নয়, অন্য ডিপার্টমেন্টের কলিগদের সাথেও সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করা প্রয়োজন।
যখন আপনি নতুন চাকরি শুরু করেন, আপনি অফিসের যেকোন লেভেলের সহকর্মীদের সাথে চা-কফি বা লাঞ্চ করতে পারেন। ইন্টারনালি এইধরনের নেটওয়ার্ক থেকে আপনি কোম্পানির কালচারগুলো সম্পর্কে যথেষ্ট জানতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন।

দু’জন দু’জনার: কোম্পানি ও এমপ্লয়ি

ঢাবি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর মো. আক্কাস স্যার ক্লাস নিচ্ছেন। শুরু করলেন এমপ্লয়িবেলিটি টপিক (employability)। এটা তো জানি। এমপ্লয়িবালিটি মানে একজন এমপ্লয়ির চাকরি করার যোগ্যতা ও দক্ষতা। না, তিনি একটু ভিন্নভাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন। বিজনেস অনুষদের ডিগ্রিপ্রাপ্ত সকলেই বিষয়টি জানেন। কিন্তু ভিন্ন ডিসিপ্লিনের ছাত্র হিসেবে আমাকে বেশ আকর্ষণ করলো। স্যার বললেন, এমপ্লয়িকেই নিজ দায়িত্বে তার ডেপেলপমেন্ট চালিয়ে যেতে হবে যাতে করে চাকরির বাজারে তার মূল্য বজায় থাকে, অফিসে তার কদর থাকে বা গুরুত্ব থাকে। কিন্তু এটি তো কোম্পানির দায়িত্ব, কোম্পানি তার এমপ্লয়িকে ট্রেনিং করাবে, প্রয়োজনীয় স্কিল উন্নয়নে প্রোগ্রাম হাতে নিবে।
এবার একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। আমার একজন শ্রেেদ্ধয় স্যার। নাম মিরাজ স্যার (কাল্পনিক নাম)। বয়স ৫০। সুদর্শন, পোশাকে পরিপাটি ও চটপটে। কিন্তু কম্পিউটারের মাউসের কার্সর জায়গা মতো নিতে তার কষ্ট হয়। তাই হেল্প করলে, না করেননা। আফসোস করে বলেন, যখন ব্রাঞ্চে একটি কম্পিউটার ছিল, আমি ছিলাম কম্পিউটার রুমের দায়িত্বে। কম্পিউটারের বস। সময়ের ব্যবধানে আজ মাউস ধরতেও আমার বেগ পেতে হয়। টাইপ তো অনেক দূরের কথা। তার মানে সময়ের সাথে না চলার কারনে তার সাথে বর্তমান প্রযুক্তির বেশ দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। আমি আতঁকে উঠি, একদিন কি আমারও এমন হবে? আমিও তো নতুন কিছু শিখছিনা।
এবার আক্কাস স্যারের টপিকটা নিয়ে নেটে কিছুটা ঘাটাঘাটি করি। পাওয়া গেল চাকরিপূর্বের এমপ্লয়িবালিটি, চাকরি পরবর্তী কোম্পানি কর্তৃক এমপ্লয়িবালিটি ও স্ব-উদ্যোগে এমপ্লয়িবালিটি। স্ব-উদ্যোগে এমপ্লয়িবালিটি যেহেতু নিজের হাতে সেহেতু এবিষয়ে সবসময় আমাদের তৈরি থাকা উচিত। নতুন প্রযুক্তি আসে। নতুন সফটওয়্যার আসে। আমাদের এসব বিষয়ে খোজ রাখা উচিত। দেশ-বিদেশের জার্নালে নতুন থিওরি বা কনসেপ্ট আসে। খোজ রাখা প্রয়োজন নিজের স্বার্থে। পরে জানবো করে করে, কয়েকবছর পর বহু কিছু অজানা থেকে যায়। আর নিজেকে পিছিয়ে রাখা হয়। নতুন জেনারেশন আসে, তাদের প্রতি নির্ভরতা বাড়ে।
এমপ্øয়িবালিটির বা কর্মদক্ষতার এই আইডিয়া এমপ্লয়ির ব্যক্তিগত মোটিভেশনের উপর নির্ভরশীল। শুধুমাত্র কোন বিষয়ে জানা বা তা কিভাবে করতে হয় এর উপর এমপ্লয়িবালিটি নির্ভর করেনা। বরং অর্জিত জ্ঞান বা দক্ষতা তিনি ব্যবহার করতে ইচ্ছুক কিনা তার উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ ইচ্ছুক ব্যক্তিই কেবলমাত্র ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট দৌড়ে যোগ দিতে পারেন।
এমপ্লয়িবালিটি এমন এটি সম্পদ যা ব্যক্তিকে যেকোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করার যোগ্য বা উপযোগী করে তোলে। এটাই এমপ্লয়ির মার্কেট ভ্যালু । যখন এমপ্লয়ির মার্কেট ভ্যালু তৈরি হয়ে যায়, তখন কোম্পানি তাকে অপরিহার্য ভাবে। সহজে ছাড়তে চায়না। কোম্পানি নিজের স্বার্থে তাকে বিবিধ সুবিধা প্রদান করে কোম্পানিতে ধরে রাখে। বিষয়টা অনেকটা এইরকম- এমপ্লয়ি নিজের স্বার্থে নিজেকে ডেভেলপ করবে. কোম্পানির কাছে নিজেকে অপরিহার্য করে তুলবে । আর কোম্পানি তার স্বার্থেই এই মানবসম্পদকে কাজে লাগাবে ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করবে । মজা করে যদি বলি, দু’জন- দু’জনার।
করোনা সংকটে যে যতটুকু অবসর পাই, নিজের অ্যাবিলিটি বাড়ানার জন্য চেষ্টা করি। নিজের দূর্বল দিকগুলো লিস্ট করি এবং তা উন্নয়নে চেষ্টা করি। আপনার আশে-পাশে অনেকেই অলরেডি শুরু করেছেন। আমরা যারা এখনও পিছিয়ে আছি, আসুন জ্ঞান বা দক্ষতা অর্জনে নেমে পড়ি।

শিখতেই থাকি, শিখতেই থাকি

কেন আমি প্রফিট কম পেলাম? না স্যার, আপনি প্রফিট ঠিকই পেয়েছেন। শর্ত ছিল আপনার টাকাটা টার্ম ডিপোজিট হিসেবে ৩ বছর থাকবে কিন্তু আপনি ২ বছরের পূর্বেই ক্লোজ করছেন। তাই ব্যাংক আপনাকে ২ বছরের প্রফিট রেটে মুনাফা দিচ্ছে। সফটওয়্যারে ক্যালকুলেশনটা অটোমেটিক চলে আসে। রাখেন আপনার সফটওয়্যার! আমাকে খাতা কলমে বুঝান। চলছিল এক জুনিয়র কর্মকর্তা আর গ্রাহকের বাকযুদ্ধ। অবশেষে ম্যানেজারের রুমে প্রবেশ করলেন গ্রাহক। ম্যানেজার সব শুনে ঠান্ডা মাথায় তাকে হিসাব বুঝিয়ে দিলেন। তিনি আমতা আমতা করে বিষয়টা বুঝলেন। কিন্তু তাকে এতক্ষন জুনিয়র কর্মকর্তারা বুঝাতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। ম্যানেজার তার অভিজ্ঞতা আর দক্ষতা দিয়ে বিষয়টা সহজেই সমাধান করলেন।

আপনার সুপারভাইজার বা ইনচার্জ থেকে প্রাকটিক্যালি আপনি অনেক কিছু শিখতে পারেন। কিভাবে তিনি তার কাজে সফল হচ্ছেন আপনি তা অবজার্ভ করুন। তিনি কিভাবে তার টিমমেটদের ম্যানেজ করছেন বা পরিচালনা করছেন সেটিও দেখার বিষয়, শেখার বিষয়। তার বিহেভিয়ারে সহকর্মীরা কিভাবে তাকে ফলো করছে, কিভাবে টার্গেটগুলো পূরণে করছে, সেটি থেকেও শেখা যায়। কোন উপায়ে তিনি তাদেরকে অনুপ্রাণিত করছেন, সহকর্মীদের নেগেটিভ প্রতিক্রিয়ায় তিনি কিভাবে সুন্দর আচরণ করছেন। কিভাবে ক্লায়েন্ট হ্যান্ডেল করছেন। কোন সব শব্দ দিয়ে তাদেরকে শান্ত রাখছেন। এই বিষয়গুলো থেকে লেসন নিন। তার আর কি কি যোগ্যতা থাকলে অধিকতর ভালো হত ? সেসব বিষয়ে সচেতন বা স্কিলড হয়ে আপনি আরও বেশি নিজেকে পূর্ণতা দিতে পারেন

একটুখানি গল্প আর প্রোডাক্টিভিটি

কি ব্যাপার, আপনি আজকের ক্লিয়ারিংয়ে চেকটা পাঠালেননা কেন? ব্রাঞ্চ ম্যানেজার জানতে চাইলেন একটু রূঢ়ভাবে। মিস্টার রবিন আমতা আমতা করে বললেন, স্যার ভুল হয়ে গেছে। ক্লায়েন্ট আসলে শেষ সময়ে এসেছিল তাই ধরাতে পারেনি। কিন্তু উনি তো বলছেন সময় থাকতেই জমা দিয়েছেন। একটু যতœবান হোন কাজের প্রতি। যা হোক মন খারাপ করবেননা। ক্লায়েন্টরা সামান্য বিষয়েও ছাড় দিতে চায়না। আমি তার নিকট স্যরি বলেছি। বললেন ম্যানেজার।

অনেকদিন পর একজন ফ্রেন্ড মিস্টার রবিনের সাথে দেখা করতে এসেছে। চায়ের ফাঁকে মাত্র ১০ মিনিট গল্প হয়েছিল। গল্পের তালে মিস্টার রবিন শেষ দিকে জমা পড়া কয়েকটি চেক ক্লিয়ারিং দিতে ব্যর্থ হয়।

এভাবে যারা অপরিকল্পিতভাবে আপনার অফিসে নন-বিজনেস ইস্যুতে আসে, অফিসের স্বার্থে এইজাতীয় লোকজনকে পরিহার করা উচিত। কলিগ বা সুইপারভাইজার সরাসরি কেউ আপনাকে হয়ত কিছু বলবেনা। কিন্তু আপনার রেপুটিশনে এটি প্রভাব ফেলবে। সবার নিকট অফিস তো কাজের জায়গা। বন্ধু- বান্ধবকে অফিস শেষে সুবিধাজনক জায়গায় দেখা করতে বলুন। অনাকাঙ্খিত কেউ যদি এসেই পড়ে, মন খারাপ না করে কোন টেকনিক বের করুন যাতে তারা কষ্ট না পায়। দিনশেষে বা মাসশেষে আপনার কাজ/টার্গেট আপনাকেই সম্পন্ন করতে হবে। বিষয়টি সরাসরি প্রোডাক্টিটিভিটির সাথে জড়িত।

অর্গানাইজড হই-অধিকতর প্রাইয়োরিটি গুলো ঠিক করি

আসুন অর্গানাইজড হই। বিশৃংখলভাবে কাজ করে অর্জন করা কঠিন। আমরা অর্গানাইজড হয়ে জন্ম নিইনা। এই স্কিল অর্জন করতে হয়। অর্গানাইজড লোকগুলোর সময়ও নষ্ট কম হয়। আপনার সময় এবং সম্পদকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারবেন যদি আপনি অর্গানাইজড হন। বেটার অর্গানাইজড হতে অধিকতর প্রাইয়োরিটি গুলো ঠিক করুন এবং নজর দিন সেদিকে। কম গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো পরে করুন। সহকর্মীরা চাইবে গল্প করতে, বন্ধুরা সময় চাইবে। কিন্তু আপনার রুটিন আপনি নিয়ন্ত্রন করুন।