১৯৯০ সালের দিকে হোম ইউজাররা ডেস্কটপ কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ যেমন কি বোর্ড, মাউস, হার্ডডিস্ক, ভিডিওকার্ড, মাদারবোর্ড এবং মাইক্রোপ্রসেসর ইত্যাদির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিষয়ে খুব বেশি জানতেননা। কাউকে যদি বলা হতো তোমার ফেবারিট মাইক্রোপ্রসেসর কোনটি। লোকে বলতে পারতো না। লোগো নিয়ে বৈপ্লবিক স্ট্রাটেজি ইন্টেলকে বিশ্বখ্যাত ব্রান্ডের স্বীকৃতি এনে দেয়।
ইন্টেল ও অন্যান্য চিপ প্রস্তুতকারকরা প্রতি ২ বছরের মধ্যে নতুন জেনারেশনের প্রসেসর আনতো। ১৬ বিটের পরে ৩২ বিটের প্রসেসর। মানুষ নতুন সংস্করন কিনতে চাইতো না। পূর্বের ভার্সনের তুলনায় পরের ভার্সন বেশি কার্যক্ষমসম্পন্ন এবং অন্যান্য কোম্পানির প্রসেসরের চেয়েও ইন্টেলের প্রসেসর অপেক্ষাকৃত দ্রতগতির -বিষয়টি গ্রাহকরা বুঝতোনা। এর মধ্যে ৪র্থ জেনারেশনের মাইক্রোপ্রসেসর আসলো।
ইন্টেল নিজেদের ব্রান্ডিং নিয়ে চিন্তা শুরু করলো। শুরুতে ‘intel inside’ ট্যাগ লাইনটা সংযুক্ত করতে তারা কিছুটা দ্বিধাগ্রস্থ ছিল। কারন অন্যান্য কোম্পানির প্রোডাক্টের সমন্বয়ে একটা পরিপূর্ণ পিসি হতো। তাই অন্য কোম্পানির স্বার্থের দিকে খেয়াল রেখে ১৯৯১ সালে ইন্টেল ‘ইন্টিগ্রেটেড বা সমন্বিত ব্রান্ডিং প্রোগ্রাম’ হাতে নিল। ইন্টিগ্রেটেড প্রোগ্রামের মাধ্যমে ৬% রিবেট পেতে শুরু করলো চিপ ক্রেতারা। একইসাথে ইন্টেল তার পার্টনার কোম্পানিগুলোকে বিজ্ঞাপন খাতে ৫০% খরচ শেয়ার করতে বলল। শর্ত অনুযায়ী সমজাতীয় কোম্পানিগুলো তাদের প্রোডাক্টে এবং বিজ্ঞাপনে ‘intel inside’ লোগো প্রেজেন্ট করতে লাগল। ফলে গ্রাহক সহজে বুঝতে শুরু করলো যে, তারা ইন্টেলের প্রোডাক্ট ব্যবহার করছে। পত্রিকা, বিলবোর্ড ও টিভিতে বিজ্ঞাপন প্রচার হল।
সমন্বিত যে অ্যাড তৈরি হল তাতে intel এর নামটি সবার শেষে আসতো। লজিক ছিল শেষটাই গ্রাহকের মাথায় থাকে এবং পজেটিভ ইম্প্রেশন তৈরি করে। এই লোগোর সাথে স্বতন্ত্রীয় একটি মিউজিক ছিল। লোগোটা হঠাৎ করে স্ক্রীনে চলে আসতো না। স্ক্রীনে ধীরে ধীরে ভেসে উঠতো। সাইকোলজিকালে এগুলো প্রভাব ফেলে ।
ইন্টেল দীর্ঘসময় ধরে প্রসেসরে নেতৃত্বে, ফলে তাদের অর্থ ছিল পর্যাপ্ত। প্রতিযোগী কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন প্রচারে পিছিয়ে ছিল। ইন্টেল একইসময়ে লো কস্ট আরেকটি প্রোডাক্ট ‘ইন্টেল সিলেরন‘ সিরিজ নিয়ে আসে যাতে লো কস্টের প্রোডাক্টগুলো ফেইস করা যায়। অবশেষে গ্রাহক চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসে। intel inside একটি লোগো হয়ে উঠলো। হাজার হাজার পিসি নির্মাতা এখন ইন্টেলের লোগো ব্যবহারের লাইসেন্স নেয় যাতে ইন্টেলের ব্রান্ডিংয়ে তাদের প্রোডাক্ট বিক্রি বাড়ে।