বিশ্বখ্যাত বড় কোম্পানিগুলো ব্রান্ড উন্নয়নে এমপ্লয়িদের মাঝে ইমোশনাল এনগেইজমেন্ট তৈরি করে। সকল লাক্সারিয়াস হোটেলে দামি বেড, ফার্নিচার, বড় টিভি ইত্যাদি থাকে। এটি সকলেই এক্সপেক্ট করে। এগুলোই বেসিক বিষয়। কিন্তু The Ritz-Carlton Hotelএকটু ভিন্নভাবে চিন্তা করলো। হোটেলের brand উন্নয়নে এমপ্লয়িদের মধ্যে ইমোশনাল এনগেইজমেন্ট আনতে হবে এবং ক্লায়েন্টদেরকে ভিন্নরকম এক্সপেরিয়েন্স দেয়া প্রয়োজন। ২০০৬ সালে তারা নতুন সার্ভিস রুল বা গাইডলাইন তৈরি করলো এবং বাস্তবায়নে নেমে পড়লো। তাদের উল্লেখযোগ্য কিছু সার্ভিস পলিসি হল:
১. আমি এমপ্লয়ি হিসেবে ক্লায়েন্টের জন্য ইউনিক কিছু করার দক্ষতা অর্জন করেছি (সার্ভিস দিবার সময়)
২. প্রতিদিনকার কাজ কী, আমি সেটা বুঝতে পারি
৩. আমি নিজেই ক্লায়েন্টের সমস্যা সমাধান করতে পারি
৪. কাজের পরিকল্পনায় আমি নিজেই ইলভলব্ বা সম্পৃক্ত হই (involvement গুরুত্বপূর্ণ শব্দ)
ফলাফল চমৎকার। একবার কোন গেস্ট এই হোটেলের এক্সপিরিয়েন্স গ্রহণের পর সাধারণত অন্য হোটেলে থাকার কথা চিন্তা করেনা। সুতরাং কোম্পানির ব্রান্ড উন্নয়নে প্রত্যেকেই অংশ নিই, অবদান রাখি। সেবাকে কতটা এক্সিলেন্স লেভেলে নেওয়া যায় সে চেষ্টা করি।
ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের এইতো সময় জানিয়ে দিন শিখিয়ে দিন
প্রয়োজন থেকেই উদ্ভাবন। পারিনা বলেই তো প্রশিক্ষণ। বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল সুবিধাগুলোর অভ্যস্ত করানোর এইতো সময়। অনলাইনে ড্রেস ক্রয়, দরকারি পণ্যের অর্ডার করা বা প্রতিদিনকার বাজার করতে মানুষ অভ্যস্ত হতে শুরু করেছে। তবে সংখ্যাটা খুব কম। মানুষের মাঝে ভয় বা শংকা আছে ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা অ্যাপসভিত্তিক ব্যাংকিংকে নিয়ে। ভয় কাটানোর দায়িত্ব ব্যাংকগুলো নিতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা সময়ে দাবী। ইউটিউবভিত্তিক ২০/৩০ সেকেন্ডের প্রচুর ভিডিও ক্লিপিংস তৈরি করা দরকার। মানুষকে শিখিয়ে দিন। জানিয়ে দিন। যত বেশি জানবে তাদের ভয় কাটবে। কার্ডসেবায় মানুষকে অভ্যস্ত করিয়ে সেবাকে আরও বেশি গতিশীল বা সুবিধাজনক করা যায়। অ্যাপসভিত্তিক সেবার ব্যাপক প্রচার দরকার। টার্গেট থাকতে পারে, কমপক্ষে ৮০ শতাংশ গ্রাহক আইটি বেইজড প্রোডাক্ট ব্যবহারে অভ্যস্ত হবে আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে। তাদেরকে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের। ব্যাংকার অথবা পারদর্শী গ্রাহকরা তাদের বন্ধু-বান্ধব বা স্বজনকে এক্ষেত্রে আগ্রহী করতে পারেন।
নো কমপ্রোমাইজ: ব্যায়াম পুষ্টি ঘুম
আমরা যদি ব্যক্তিগত বা পেশাগত জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকি তাহলে অপেক্ষাকৃত বেশি প্রোডাকটিভ হতে পারি। সকলেই জানি এইজন্য প্রয়োজন নিয়মিত ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ, পর্যাপ্ত পুষ্টি এবং ৭-৮ ঘন্টা ঘুম। এইক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া উচিত নয়। দালাইলামাকে জিজ্ঞেস করা হল মানুষের কোন বিষয়টি তাকে বিস্মিত (সারপ্রাইজড) করে। উত্তরে তিনি বলেন,
“মানুষ টাকার পেছনে ছুটতে গিয়ে স্বাস্থ্যটাকে হারিয়ে ফেলে। অতপর স্বাস্থ্যটাকে পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে টাকাগুলো খরচ করতে থাকে। অতপর তিনি তার ভবিষ্যত নিয়ে এতই চিন্তিত থাকেন যে বর্তমানকে উপভোগ করতে পারেননা। ফলাফল এই যে, না তিনি থাকেন বর্তমানে, না ভবিষ্যতে। তিনি বেঁচে থাকেন এমনভাবে যেন কখনো মরবেননা। অতপর তিনি মারা যান যেন তিনি কখনো বেঁচে ছিলেননা।”
একটা দেশ যেভাবে দাঁড়ায়
একটি দেশ যেভাবে দাঁড়ায়
লেখক রউফুল আলম
(যুক্তরাষ্ট্রে ফার্মাসউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির সায়েন্টিস্ট)
১ম অধ্যায়ে লেখক বলছেন, আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি তরুণ গবেষক পাঠায় যে দেশটি, সেটা হল চীন। প্রায় ১০ হাজার, প্রতিবছর। লেখক এটাকে বলছেন ইন্টিলেকচুয়াল স্ক্যানিং। চীন হাজার হাজার ছেলেমেয়ে এখানে পাঠিয়ে গবেষণার যত ডিজাইন,অ্যারেঞ্জমেন্ট, টুলস-টেকনিক আছে সেগুলো স্ক্যান করে নিয়ে যাচ্ছে। লেখক বলছেন চীন থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। যে দেশটি সারা দুনিয়া থেকে শেখে, তাদের কাছ থেকে আমরা প্রচুর জ্ঞান বিজ্ঞান নিতে পারি।
সজাগ হওহে তারুণ্য অংশে লেখক বলছেন, আমাদের দেশের অসংখ্য ছেলেমেয়ে ২০-২২ বছর বয়সে গবেষণার কথাই জানেননা।— সারা দুনিয়ায় তরুণেরা গড়ে ২৬-২৭ এর মধ্যে পিএইচডি শেষ করেন। সম্ভাবনাকে জাগতে দিন, অংশে তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশে বলছেন, আপনার যে ছেলেমেয়েটিকে ¯্রফে একজন ডাক্তার বানাবেন, সে হয়তো তার চেয়ে অনেক বড় কিছু হওয়ার যোগ্যতা রাখে। সে সম্ভাবনাকে বের করে আনার চেষ্টাও করতে হয়।
মগজের ধ্বসংযজ্ঞ অংশে লেখক উল্লেখ করেছেন, লেখকের সায়েন্টিফিক হিরোর নাম রিচার্ড ফাইনম্যান। বিল গেটসের প্রিয় শিক্ষক। মানুষ মজা করে বলে ফাইনম্যান একটি ডায়াগ্রাম একেই নোবেল পুরস্কার পেয়ে গেছেন। —এত সরল ডায়াগ্রাম বিজ্ঞানে খুব বেশি নেই। ফাইনম্যান বলতেন, I don’t create, what I don’t understand যা বুঝিনা তা গড়ি না।
অন্তরে বাহিরে দাসত্বের রজ্জু অংশে বলছেন, নিজেকে ক্ষুদ্র মনে করাই ক্ষুদ্রতা। আফ্রিকান একটি প্রবাদ আছে If you think your are too small to make a difference, try sleeping with a mosquito.
লেখকের দেশপ্রেম তথা দেশের প্রতি আবেগকে সম্মান জানাতে হয়। তিনি বলছেন পৃথিবীর পথে পথে যেখানেই গিয়েছি, মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করেছে হয়ার আর ইউ ফ্রম? হৃদয়ের সমস্ত ভালো লাগা দিয়ে ঝজু শিরে বলেছি, আই অ্যাম ফ্রম বাংলাদেশ।
নিজেকে আবিস্কার করো অংশে বলছেন,আমাদের দেশটার জন্য অনেক গবেষক, উদ্ভাবক প্রয়োজন। আমাদের বিজ্ঞানের ছেলেমেয়েরা যদি শুধু বিসিএস পরীক্ষাকেই আরাধনার বিষয় মনে করে তাহলে কী করে আমরা বিজ্ঞানী ও গবেষক পাব?– ঝাঁকের সঙ্গে দৌড়ে নিজের বৃহত্তর সম্ভাবনাটুকু খুন করো না।
জাগরণের কাল অংশে লেখক সম্ভাবনার কথা বলছেন, ট্রেক্সাসে প্রায় ৫০ এর অধিক বাংলাদেশি গবেষক রয়েছেন। — যে আমেরিকায় ট্রাম্প আসার কারণে ভিসা পাওয়াটাই কঠিন হয়ে গেছে, সে আমেরিকায়ও বাংলাদেশের বহু ছেলেমেয়ে যাচ্ছেন। লেখক বলছেন, ইন্টারনেট একটা বড় রিসোর্স। এটাকে কাজে লাগাতে হবে। চীনা ভাষা শেখো, জাপানি, কোরিয়ান, জার্মান, ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান, স্পানিশ শেখো। সুযোগগুলো লুফে নাও।
স্ট্যানফোর্ডের আকাশ অংশে বলছেন, ব্যবসা ও টেকনোলজির এক জীবন্ত জায়গা হলো ক্যালিফোর্নিয়া। ওখানে দেখা যায় একুশের তরুণেরা কোম্পানি খুলে বসে আছেন। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা হচ্ছে। নতুন নতুন আইডিয়া, উদ্ভাবন, প্রচার, প্রসার, বাণিজ্য -এই চলছে সেখানে।
ফড়িংয়ের চোখ তৈরি করো অংশে লেখক বলছেন, এক গবেষক লজ্জাবতী নিয়ে গবেষণা করছেন। গবেষকরা চেষ্ট করছেন, কী করে লজ্জাবতীর চুপসে যাওয়া নিয়ন্ত্রণকারী জিনকে স্টাডি করে অন্য উদ্ভিদের শরীরে প্রবেশ করানো যায়। তিনি বলছেন, আমগাছের যদি লজ্জাবতীর মতো গুণ থাকত, তাহলে ঝড়ের দিনে বৃষ্টি বা বাতাসের স্পর্শে নিজেকে গুটিয়ে নিতে পারত। ঝড়ের ধকল তাকে সইতে হতো না। এইরূপ চিন্তা আসলে -জিনের ইঞ্জিনিয়ারিং।
রউফুল আলমের চিন্তাগুলো আমাদের সন্তানদের নিকট ট্রান্সফার করতে পারি। ২০১৯ এর অমর একুশে বইমেলায় বইটি প্রকাশ হয়। ১৯২ পৃষ্ঠায় লিখিত এর মূল্য মাত্র ৩০০ টাকা। সময় প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। বইটি পেতে রকমারি ডট কমে অর্ডার করতে পারেন।
বিজনেস লিডার
ঘটনা:১
ভাই বেচা কেনা নেই। পাশের দোকানে কাস্টমারের ভিড় লেগেই থাকে। কি করতাম কন দেহি। মাতবর উত্তর দেয়, তুমি ত কর্মচারীর সাথে খারাপ আচরণ কর। এর প্রভাব কর্মচারীর উপর পড়ে। কর্মচারীও কাস্টমারের সাথে খারাপ আচরণ করে। আন্তরিক সেবা দেয়না। কাস্টমার থাকব কেমনে ? General Motors এর সিইও মেরি বাররা’র বিখ্যাত উক্তি: আমরা যদি ইমপ্লয়ির হৃদয় ও মন জয় করতে পারি, তবে অধিকতর ব্যবসয়িক সফলতা পেতে পারি। সৌর বিদুৎ নিয়ে কাজ করা আমেরিকার sunrun কোম্পানির সিইও Lynn Jurich বলেন সবচেয়ে বড় পার্থক্য তৈরি করে যে কাজটি সেটি হল-সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের বিহেভিয়ার পরিবর্তন করা।
ঘটনা:২
এই জিনিস ফেরত নেয়া যাবেনা। আমি চেক করে দিয়েছি। না ভাই চেক করি দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু এই লিকেজ আপনি খেয়াল করেননি। না ভাই, হবেনা। স্টিকারও উঠিয়ে ফেলেছেন। Spotify এর সিইও ডানিয়েল ইকে বলেন-কনজিউমারের প্রতি ফোকাস করুন। শুনুন তাদের কথা। প্রকৃতপক্ষে তারা যা বলতে চায়।
PepsiCo কোম্পানির সিইও ইন্দ্রা নুয়ি বলেন, আমি নিষ্ঠুরভাবে সৎ। আমি অন্যের পয়েন্ট অব ভিউ থেকে নিজেকে চিন্তা করি। আমি জানি কখন হাঁটতে হয়। Salesforce এর সিইও বলছেন-আপনাকে অবশ্যই ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা বা অনুমান ((predict) ) করতে হবে। তারপর কি? তারপর আর কি হতে পারে? কিভাবে বর্তমান প্রক্রিয়াটি সহজ করা যায় তা নিয়ে ভাবুন।
সুতরাং আসুন কাস্টমারের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করি। তাদের সুবিধা অসুবিধাগুলো নিয়ে চিন্তা করি। চেষ্টা করি তাদের সমস্যাগুলো কতটুকু সহজভাবে সমাধান করা যায়।
ঘটনা:৩ তোমার বাপ-দাদারা কষ্ট করে ব্যবসাটার সুনাম দাঁড় করিয়েছে। তুমি মিয়া কাস্টমারের সাথে যাচ্ছেতাই ব্যবহার কর। এটি মোটেই ঠিক নয়। ওয়ারেন বাফেট এর বিখ্যাত একটা উক্তি হল-সুনাম সুখ্যাতি অর্জনে সময় লাগতে পারে ৩০ বছর আর ধ্বংস হয় তা মাত্র ৩০ সেকেন্ডে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করুন এবং ভিন্নভাবে চিন্তা করুন। আমাজনের প্রধান জেফ বেজোস বলেন, একজন ব্যক্তির সুনামই হচ্ছে কোম্পনির ব্রান্ডিং। আন্তরিক পরিশ্রমের ভিত্তিতে তা অর্জিত হয়।
সবাই দেখছে
লোকে আপনাকে সার্বক্ষণিক দেখছে। বহু চোখ আপনার উপর। আপনি যদি লিডার হন, লোকে আপনাকে মিনিটে মিনিটে সাইজ করছে। আবার কখনও কখনও আপনাকে দেখে শিখছে। প্যান্টের ময়লা পকেট কিংবা শার্টের ময়লা কলারও আপনার রুচি প্রকাশ করছে। আপনার অ্যাপিরিয়েন্স আপনার কোম্পানির লোগোকে প্রেজেন্ট করে। আপনি কি ধরণের পোশাক পরেছেন-মানুষ খেয়াল করছে এবং এই বিষয়ে আপনার বসও লিগ্যালি আপনাকে কিছু বলবেনা।
ফিজিক্যালি আপনি কিভাবে পরিচালিত হবেন, আপনার ম্যানার কিরূপ হবে, কিভাবে চোখ দিয়ে তাকাবেন, কখন মাথা ঝাকাবেন, ভয়েস কতটা মৃদু হবে। হ্যা কিছু বিষয় আল্লাহ প্রদত্ত। যেমন:আপনার উচ্চতা, কালার, সৌন্দর্য । আপনি কিভাবে এগুলোকে সুন্দরভাবে ব্যবহার করবেন,সিদ্ধান্ত আপনার। কসমেটিক বিশ্বে একটি বিখ্যাত কথা হল- There are no ugly women, only lazy ones.
চিরসাথী জীবনসাথী
ভাই আপনার ওয়াইফ তো আমার ওয়াইফের নিকট বোনাসের কথা বলে দিয়েছে। আপনি বুঝি এইসব ভাবীর কাছে বলেন। আমি তো কখনও বলিনা। আপনার ওয়াইফ বলছে, ভাবী এবার বোনাস দিয়ে ভাই আপনাকে কি গিফট দিবে। আমি তো অবাক। এটা আবার শুনলো কেমনে। ভাবছিলাম কিছু ঋণ শোধ দিবো। বাচ্চদের স্কুলে ভর্তি করাবো। আর কিছুটা সঞ্চয় করবো। এখন তো পুরো প্লান আউলাইয়া গেল।
সাকসেসফুল বিজনেস লিডারদের পেছনে লাইফ পার্টনারের (স্বামী/স্ত্রী) যথেষ্ট ভূমিকা থাকে। দু’জন মিলে একটা চমৎকার টিম। তার কথা শুনুন এবং বিভিন্ন ইস্যুতে তাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি জানেন কোন বিষয়টি আপনাকে সুখী করবে। তিনি আপনার পরিপূর্ণ আস্থা এবং লাইফ কোচ। কোন ড্রেসে আপনাকে ভালো মানাবে? কর্পোরেট প্রেজেন্টেশনে কিভাবে কথা বলবেন, সাউন্ড কতটা উচু করবেন, কখন হাসবেন। রিহার্সালের সময় তাকে সাথে রাখুন। বিজনেস ইস্যুগুলো শেয়ার করুন। সাংসরিক আয়-ব্যয় শেয়ার করুন। তার নিকট থেকেও সুন্দর আইডিয়া আসতে পারে। আশা করা যায় পারস্পরিক শেয়ারের মাধ্যমে সুন্দর সম্পর্কটি আরও বেশি সুন্দর হবে।
রিজাইন দেয়ার পূর্বে
নাজমুল সাহেব বর্তমান দায়িত্ব নিয়ে বেশ বিরক্ত। কোম্পানিকে তার পক্ষে আরও বেশি দেয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু ভালো দায়িত্ব পাচ্ছেননা। একই পদবীতে অনেক দিন। রিজাইন দিতে তার ইচ্ছে হয়। কিন্তু পরিচিত পরিবেশ ছাড়তে মনও সায় দেয়না।
লোকে যখন চাকুরির অফার পায় তখন বর্তমান চাকুরি ছেড়ে দেয়। কারণ অন্য কোম্পানিতে ভাল স্যালারি বা দায়িত্ব পেতে আগ্রহী হয়। তবে বর্তমান চাকুরি ছেড়ে দেয়ার পূর্বে বর্তমান দায়িত্ব নিয়ে আপনার বসকে অবহিত করুন । আপনি তাকে জানান আপনি এখানে আর একটু উন্নতি আশা করেন। বৃহৎ দায়িত্ব পেতে চান। হয়ত আপনার ব্যাপারে ভালো কোন চিন্তা কর্তৃপক্ষ করতে পারেন। অফার হাতে রেখেই আপনি কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন। আপনি যদি দায়িত্বশীল বা ত্যাগী অফিসার হন, বর্তমান বস আপনাকে হারাতে চাইবেনা। আপনি নতুন কোন ভাল দায়িত্ব পেতে পারেন।
WOW story
আপনি পাহাড়ের চূড়ায় উঠে অপলক নয়নে উদীয়মান সূর্যের দিকে অথবা শান্ত সমুদ্রের ডুবু ডুবু সূর্যের দিকে তাকিয়ে আছেন। তখনই মুগ্ধতার বহিঃপ্রকাশ ওয়াও (wow)।
ওয়াও স্টোরি কর্পোরেট কালচার উন্নয়নে চমৎকার ভূমিকা রাখতে পারে। তো কিভাবে? বিশ্বখ্যাত The Ritz-Carlton Hotel হোটেলের শতাধিক শাখা রয়েছে। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের প্রতিটি শিফটে ১৫ মিনিটের ওয়াও স্টোরি শেয়ার করা হয় ইমপ্লয়িদের মাঝে। এই স্টোরি তৈরি হয় ইমপ্লয়িদের ইউনিক ও স্মরণীয় অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। সাংহাই-এর হাউসকিপার সান্ধকালীন শিফটে যে গল্প শুনাচেছ, ১ ঘন্টা পরে হংকং-এ এবং পরদিন সকালে নিউইয়র্কের ইমপ্লয়িরা তা শুনছে।
আমরাও পারি আমাদের সেরা কাজগুলোর অভিজ্ঞতা অন্য কলিগদের সাথে শেয়ার করতে। একেকজন একেকভাবে ক্রাইসিস ম্যানেজ করেন। সেখান থেকে শেখার আছে। সিনিয়র জুনিয়র সবার কাছ থেকে শেখার আছে।
Interl Inside ব্রান্ড হয়ে উঠার গল্প
১৯৯০ সালের দিকে হোম ইউজাররা ডেস্কটপ কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ যেমন কি বোর্ড, মাউস, হার্ডডিস্ক, ভিডিওকার্ড, মাদারবোর্ড এবং মাইক্রোপ্রসেসর ইত্যাদির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিষয়ে খুব বেশি জানতেননা। কাউকে যদি বলা হতো তোমার ফেবারিট মাইক্রোপ্রসেসর কোনটি। লোকে বলতে পারতো না। লোগো নিয়ে বৈপ্লবিক স্ট্রাটেজি ইন্টেলকে বিশ্বখ্যাত ব্রান্ডের স্বীকৃতি এনে দেয়।
ইন্টেল ও অন্যান্য চিপ প্রস্তুতকারকরা প্রতি ২ বছরের মধ্যে নতুন জেনারেশনের প্রসেসর আনতো। ১৬ বিটের পরে ৩২ বিটের প্রসেসর। মানুষ নতুন সংস্করন কিনতে চাইতো না। পূর্বের ভার্সনের তুলনায় পরের ভার্সন বেশি কার্যক্ষমসম্পন্ন এবং অন্যান্য কোম্পানির প্রসেসরের চেয়েও ইন্টেলের প্রসেসর অপেক্ষাকৃত দ্রতগতির -বিষয়টি গ্রাহকরা বুঝতোনা। এর মধ্যে ৪র্থ জেনারেশনের মাইক্রোপ্রসেসর আসলো।
ইন্টেল নিজেদের ব্রান্ডিং নিয়ে চিন্তা শুরু করলো। শুরুতে ‘intel inside’ ট্যাগ লাইনটা সংযুক্ত করতে তারা কিছুটা দ্বিধাগ্রস্থ ছিল। কারন অন্যান্য কোম্পানির প্রোডাক্টের সমন্বয়ে একটা পরিপূর্ণ পিসি হতো। তাই অন্য কোম্পানির স্বার্থের দিকে খেয়াল রেখে ১৯৯১ সালে ইন্টেল ‘ইন্টিগ্রেটেড বা সমন্বিত ব্রান্ডিং প্রোগ্রাম’ হাতে নিল। ইন্টিগ্রেটেড প্রোগ্রামের মাধ্যমে ৬% রিবেট পেতে শুরু করলো চিপ ক্রেতারা। একইসাথে ইন্টেল তার পার্টনার কোম্পানিগুলোকে বিজ্ঞাপন খাতে ৫০% খরচ শেয়ার করতে বলল। শর্ত অনুযায়ী সমজাতীয় কোম্পানিগুলো তাদের প্রোডাক্টে এবং বিজ্ঞাপনে ‘intel inside’ লোগো প্রেজেন্ট করতে লাগল। ফলে গ্রাহক সহজে বুঝতে শুরু করলো যে, তারা ইন্টেলের প্রোডাক্ট ব্যবহার করছে। পত্রিকা, বিলবোর্ড ও টিভিতে বিজ্ঞাপন প্রচার হল।
সমন্বিত যে অ্যাড তৈরি হল তাতে intel এর নামটি সবার শেষে আসতো। লজিক ছিল শেষটাই গ্রাহকের মাথায় থাকে এবং পজেটিভ ইম্প্রেশন তৈরি করে। এই লোগোর সাথে স্বতন্ত্রীয় একটি মিউজিক ছিল। লোগোটা হঠাৎ করে স্ক্রীনে চলে আসতো না। স্ক্রীনে ধীরে ধীরে ভেসে উঠতো। সাইকোলজিকালে এগুলো প্রভাব ফেলে ।
ইন্টেল দীর্ঘসময় ধরে প্রসেসরে নেতৃত্বে, ফলে তাদের অর্থ ছিল পর্যাপ্ত। প্রতিযোগী কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন প্রচারে পিছিয়ে ছিল। ইন্টেল একইসময়ে লো কস্ট আরেকটি প্রোডাক্ট ‘ইন্টেল সিলেরন‘ সিরিজ নিয়ে আসে যাতে লো কস্টের প্রোডাক্টগুলো ফেইস করা যায়। অবশেষে গ্রাহক চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসে। intel inside একটি লোগো হয়ে উঠলো। হাজার হাজার পিসি নির্মাতা এখন ইন্টেলের লোগো ব্যবহারের লাইসেন্স নেয় যাতে ইন্টেলের ব্রান্ডিংয়ে তাদের প্রোডাক্ট বিক্রি বাড়ে।